২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ পেয়েছেন ১৫৯ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১০৯ জন শিক্ষার্থী দুই বছর মেয়াদি জয়েন্ট মাস্টার্স প্রোগ্রামে ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পেয়েছেন। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বিশাল অর্জন, কারণ সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।
ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপপ্রাপ্তদের সম্মানে আয়োজিত এক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানটি ১৪ আগস্ট, বৃহস্পতিবার, রাজধানী ঢাকার গুলশানে অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশন-এর আয়োজনে ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে ইউজিসি’র ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) এবং ইরাসমাস প্লাস ন্যাশনাল ফোকাল পয়েন্ট জেসমিন পারভীন, ফ্রান্স, জার্মান, সুইডেন, ইতালি, ডেনমার্কসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এবং ইরাসমাস মুন্ডাস অ্যালামনাইগণ অংশগ্রহণ করেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর এস এম এ ফায়েজ ইরাসমাস মুন্ডাস জয়েন্ট স্কলারশিপ প্রাপ্ত প্রতিটি শিক্ষার্থীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এই স্কলারশিপ শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং এটি পুরো জাতির জন্য গর্বের এবং সম্মানের বিষয়।
ইউজিসি চেয়ারম্যান আরো বলেন, “১৫৯ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এই সম্মানজনক স্কলারশিপ অর্জন করেছে, যা তীব্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। তারা ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়ন করতে সক্ষম হবে, যা তাদের শিক্ষা ও গবেষণায় বড় ভূমিকা রাখবে।”
প্রফেসর ফায়েজ মন্তব্য করেন, “এ বছর ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ প্রোগ্রামে বাংলাদেশের অবস্থান সারা বিশ্বে তৃতীয়। এটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মেধা, দৃঢ় সংকল্প এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় তাদের সক্ষমতার প্রদর্শক।” তিনি বিশ্বাস করেন, এই স্কলারশিপের মাধ্যমে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা নিজেদের আন্তর্জাতিক মান উন্নয়ন, ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে যোগাযোগ এবং বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার অনুষ্ঠানে বলেন, “ইরাসমাস প্লাস স্কলারশিপ প্রোগ্রামটি অত্যন্ত সফল এবং এটি বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।”
ইউজিসি চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন, “ইইউ রাষ্ট্রদূত এর কাছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপসহ বিভিন্ন বৃত্তি, যৌথ গবেষণা এবং উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে এবং তাদের বিশ্বমানের শিক্ষা লাভের সুযোগ আরও সুগম হবে।”
ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এটি ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ স্কলারশিপ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই স্কলারশিপের আওতায় ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাস্টার্স ও জয়েন্ট মাস্টার্স প্রোগ্রামে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করার সুযোগ পান।