যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা পেতে হলে আবেদনকারীদের এখন থেকে কেবল প্রথাগত নিয়মই নয়, বরং তাদের ব্যক্তিগত মনোভাবও খতিয়ে দেখা হবে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘আমেরিকাবিরোধী’ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে বা এমন মনোভাব প্রকাশ পেলে আর ভিসা দেওয়া হবে না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) এ সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ। পরদিন প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, নীতিমালার এই কঠোরতা অভিবাসনবিষয়ক আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
কী বলা হয়েছে নীতিমালায়
মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবার (USCIS) হালনাগাদ নির্দেশনায় অভিবাসন কর্মকর্তারা এখন আবেদনকারীর—
- আমেরিকাবিরোধী কর্মকাণ্ড
- সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা
- ইহুদিবিদ্বেষী কার্যকলাপ
খতিয়ে দেখবেন। এ ধরনের প্রমাণ পাওয়া গেলে আবেদনকারীর ভিসা বাতিল করা হবে।
২০১৯ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে শুরু হওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাইয়ের নিয়ম এবার আরও বিস্তৃত হলো। এখন থেকে ‘আমেরিকাবিরোধী কার্যকলাপ’ বিষয়টিও এতে অন্তর্ভুক্ত হবে।
শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলতি বছরেই যুক্তরাষ্ট্র ৬,০০০-এর বেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোকে আবেদনকারীর মধ্যে আমেরিকার নাগরিক, সংস্কৃতি, সরকার বা প্রতিষ্ঠানের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
কর্মকর্তার বক্তব্য
USCIS মুখপাত্র ম্যাথু ট্র্যাজেসার বলেন,
“যারা আমেরিকাকে ঘৃণার চোখে দেখে এবং আমেরিকাবিরোধী মতাদর্শ প্রচার করে, তাদের আমাদের সুবিধা দেওয়া উচিত নয়।”
তিনি জানান, অভিবাসন সংস্থা নতুন নীতিমালা বাস্তবায়নে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
বিতর্কের কারণ
তবে নীতিমালায় ‘আমেরিকাবিরোধী মনোভাব’ এর স্পষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। কেবল উল্লেখ করা হয়েছে, যারা ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাসবাদ বা মতাদর্শ সমর্থন করে, তাদের এ তালিকায় ধরা হবে।
উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৫২ সালের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইন (INA)। ওই আইনে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য, বৈশ্বিক কমিউনিজম সমর্থক, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার বিরোধী লেখালেখি করা ব্যক্তি বা যারা সহিংসতার মাধ্যমে সরকার উৎখাত করতে চায়—তাদের নাগরিকত্ব নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
উদ্বেগ
নতুন ঘোষণা অনলাইন ফোরামগুলোতে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। মূল প্রশ্ন—কোন বিষয়কে ‘আমেরিকাবিরোধী’ হিসেবে গণ্য করা হবে? বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, অস্পষ্ট সংজ্ঞার কারণে কর্মকর্তারা অভিবাসন প্রক্রিয়ায় আরও কঠোর হতে পারেন।