যুক্তরাষ্ট্র তাদের অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। বিশেষ করে অভিবাসী কর্মীদের জন্য জনপ্রিয় এইচ-১বি ভিসা এবং গ্রিনকার্ড নীতিতে আসছে ব্যাপক সংস্কার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক।
গত মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লুটনিক বলেন, “বর্তমান এইচ-১বি ভিসা ব্যবস্থা এক কথায় ব্যর্থ। কারণ এতে মার্কিন নাগরিকদের তুলনায় বিদেশি কর্মীরা বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় প্রতিষ্ঠান এতদিন স্থানীয়দের বাদ দিয়ে বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে। এখন সময় এসেছে মার্কিন নাগরিকদের অগ্রাধিকার দেওয়ার।”
পরে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, “আমরা এইচ-১বি ভিসা এবং গ্রিনকার্ড নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছি। বর্তমান ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন আমরা এমন নীতি প্রণয়ন করছি যা হবে দেশের জন্য এক ধরনের ‘সোনার কার্ড’। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বের সবচেয়ে দক্ষ ও মেধাবী মানুষদের আকৃষ্ট করতে পারবে।”
নতুন নীতির মূল দিকগুলো
- বর্তমান লটারি পদ্ধতি বাতিল করা হবে।
- আবেদনকারীদের মধ্যে উচ্চ আয়ের প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
- এইচ-১বি ভিসাকে মজুরিভিত্তিক ভিসা ব্যবস্থায় রূপান্তর করা হবে।
- গ্রিনকার্ড প্রদানে দক্ষতা, শিক্ষা ও আয়ের মানদণ্ডে কঠোরতা আনা হবে।
লুটনিক জানান, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে একজন মার্কিন নাগরিকের গড় বাৎসরিক আয় প্রায় ৭৫ হাজার ডলার, অথচ গ্রিনকার্ডধারী বিদেশি কর্মীদের গড় আয় মাত্র ৬৬ হাজার ডলার। এই বৈষম্যই পরিবর্তনের অন্যতম কারণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মার্কিন আইনে বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী, গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে একজনের অবশ্যই এইচ-১বি ভিসাধারী হওয়া বাধ্যতামূলক। তবে আসন্ন সংস্কারের ফলে সেই শর্ত আরও কঠোর ও বাছাইভিত্তিক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উদ্দেশ্য
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ মূলত—
- স্থানীয় মার্কিন নাগরিকদের কর্মসংস্থান বাড়ানো,
- বিদেশি কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে আনা, এবং
- বিদেশ থেকে শুধু উচ্চ দক্ষতা ও মেধাবী ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।